Skip to content

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় টিকিয়ে রাখতে সরকার অটল: কূটনীতিকদের আব্দুল মোমেন

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় টিকিয়ে রাখতে সরকার অটল: কূটনীতিকদের আব্দুল মোমেন

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন যে সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় টিকিয়ে রাখতে সরকার ‘দৃঢ় ও অটল’ অবস্থানে রয়েছে। আব্দুল মোমেন সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়, ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন। এ সময়, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৮-২৯ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের সংহিসতার কথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেন আব্দুল মোমেন। জানান, যথাসময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। তিনি বলেন, “আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, প্রত্যেক মানুষের জীবনই গুরুত্বপূর্ণ; আমাদের বিএনপির বন্ধুরা তা বুঝুক বা না বুঝুক। আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরবো এবং সংযত থাকবো।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান, জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনগত মানদণ্ডের মধ্যে সবকিছু করতে হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, দেশকে অস্থিতিশীল করা বা গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াগুলোর ক্ষতি করার যেকোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে হবে।” তিনি বলেন, “বিএনপির ভয় দেখানো ও কূটচালের কৌশল, আগেও কার্যকর হয়নি, এখনো হবে না।”

এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “আগামী নির্বাচন ২০২৩ সালের শেষে অথবা ২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে এবং এটা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।” তিনি বলেন, “কে আসবে, কে আসবে না, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে জনগণের অংশগ্রহণ। জনগণের অংশগ্রহণ থাকলে তা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।”

আইনমন্ত্রী জানান, কূটনীতিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়া হলেও, তারা কোনো প্রশ্ন করেননি। তিনি বলেন, “আমরা বুঝতে পেরেছি, আমরা যে ব্যাখ্যা দিয়েছি, তা স্পষ্ট ছিলো। আর, এতে তারা সন্তুষ্ট কি না, তা বলা তাদের দায়িত্ব।”

শাহরিয়ার আলম জানান, “কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে, অবশ্যই তাদের সাংবিধানিক পথ অনুসরণ করতে হবে।” তিনি বলেন, “২৮ ও ২৯ অক্টোবর যা ঘটেছিল তার একটি লিখিত সংস্করণসহ হত্যা, পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ অন্যান্য ঘটনার ভিডিও ফুটেজ এবং স্থির চিত্রের সংকলন কূটনীতিকদের দেয়া হয়েছে।”

কূটনীতিকদের প্রতি আব্দুল মোমেন বলেন, “গত ২৮ অক্টোবর ও গতকাল (২৯ অক্টোবর) যা ঘটেছে তাতে আমরা মর্মাহত।তবে আমরা বিস্মিত নই, কারণ আমরা অতীতে বিএনপি-জামায়াতের ভয়াবহ সহিংসতার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।” তিনি আরো বলেন, “বিএনপি ও তার মিত্রদের সহিংসতা ও আগ্রাসনের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, “আমরা ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিএনপি কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত ব্যাপক সহিংসতার সংক্ষিপ্ত বিবরণ পাঠিয়েছি।”

অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একসঙ্গে কাজ করুন: ৭ কূটনৈতিক মিশনের বিবৃতি

এদিকে, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য,সহিংসতা পরিহার করতে এবং একসঙ্গে কাজ করতে, সব স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকায় অবস্থিত ৭টি দেশের কূটনৈতিক মিশন। দেশগুলো হলো; অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) মিশনগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশের সময় সাম্প্রতিক সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ৭টি দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “২৮ অক্টোবর ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশের সময় সহিংসতায়, তাদের দেশ; অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”

বিবৃতিতে, হতাহতের ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে জানানো হয়। কূটনীতিকদের জন্য সরকারের নির্ধারিত ব্রিফিংয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে এই বিবৃতি দেয়া হয়।

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা