অক্টোবর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে খেলা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে তাঁর সরকারকে অপসারণে বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাজপথে নামবে বলে হুঁশিয়ারির জবাবে টঙ্গিতে আয়োজিত আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টঙ্গী সরকারি কলেজ মাঠে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সময়ই বলে দেবে কে ঢাকা দখল করবে। মির্জা ফখরুল (বিএনপি মহাসচিব) ইদানীং কাঁদছেন। খালেদা জিয়ার জন্য ৪৮ মিনিটেরও আন্দোলন করতে পারেননি”।
ওবায়দুল কাদের আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান ও সিমিন হোসেন রিমি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ প্রমুখ।
সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের গাজীপুর শহর শাখার সভাপতি ও গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান।
উল্লেখ্য, বিএনপি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে দলটি এবং তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো নির্বাচনের আগে ঢাকার রাজপথ দখল করবে। তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায়।
এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলমান এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে রোডমার্চসহ ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। পরে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) কর্মসূচি দুই দিন বাড়িয়ে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত করে দলটি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী—বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
এদিকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “এই ভিসা নীতিতে, আমাদের সাংবাদিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে … কেন এই জাতিকে এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে? আমরা খুব ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে আছি। অনেক মানুষ আছে যারা খুব খুশি। এটা আনন্দের বিষয় নয়, এটা লজ্জার”।
বুধবার (২৭ মেপ্টেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে আছি, দেশের অবস্থা ভয়াবহ। সেই অবস্থা থেকে বের না হলে পুরো জাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। আজ এই বিপদ, এই সংকট শুধু বিএনপির নয়, এই সংকট জাতির”।
তিনি বলেন, “সবকিছুই নির্ভর করছে আগামী কয়েকদিনের ওপর। ভবিষ্যতে আমরা স্বাধীন থাকব কি না, আমাদের স্বাধীনতা থাকবে কি না, আমাদের সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, আমার দেশ একটি ক্রীতদাস রাষ্ট্রে (ভ্যাসেল স্টেট) পরিণত হবে কি না, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কি না। আমি আমার পছন্দ অনুযায়ী আমার প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারি কি না”।
মির্জা ফখরুল বলেন, “জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনগণ সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তারা এর কোনো বিকল্প চায় না”।
মির্জা ফখরুল বলেন, “রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। প্রায় এক বছর ধরে আমরা রাজপথে রয়েছি। এতে আমাদের ২২ জন তরুণ নেতা রাস্তায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আমাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে, আমরা রয়েছি। বহুবার জেল খাটতে হয়েছে, তারপরও ওরা কখনো আমাদের দমাতে পারেনি, পারবেও না”।