Wednesday, January 15, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

ভারতরত্ন এপিজে আব্দুল কালাম জ্ঞান-বিজ্ঞান-মানবিকতায় অনন্য সাধারণ এক মহীরুহ

ডলি ঘটক * (ফেসবুক থেকে সংকলিত)
ভারতরত্ন ড. এপিজে আব্দুল কালাম ছিলেন ভারতের ১১তম রাষ্ট্রপতি। তৎকালীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার রাষ্ট্রপতি হিসেবে  আব্দুল কালামের নাম প্রস্তাব করলে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টিসহ অনেক দলই একযোগে তা মেনে নেয়। পেশাগত জীবনে এপিজে আব্দুল কালাম ছিলেন অন্যতম সেরা একজন বিজ্ঞানী এবং দেশ গড়ার কাজের মহান ব্রতী এক মহীরুহ । তিনি ” ইসরো ” ও ” ডিআরডিও “তে  দীর্ঘদিন কাজ করেন। পরে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি হন। ভারতের ” মিসাইল ম্যান ” নামে খ্যাত চিরকুমার এই মানুষটির ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর জন্মের পর থেকে ২০১৫ সালের ২৭ জুলাইয়ে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ৮৪ বছরের জীবনকালের প্রায় সবটাই ছিল শিক্ষণীয়। ভারতের ইতিহাসে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এপিজে আব্দুল কালাম আজাদই ছিলেন সবচাইতে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি।

নিজের ‘বাবা’-কে নিয়ে মহানুভব ব্যক্তিত্ব এপিজে আব্দুল কালামের নিচে সন্নিবেশিত লেখাটি আলোড়িত করে  সৈয়দপুরের শিক্ষানুরাগী- মানুষ গড়ার কারিগর এবং নারী-পুরুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী আদর্শ এক গৃহিনী ডলি ঘটককে। ডলি তার শিক্ষার্থী এবং বন্ধুদের পড়ার জন্য অনুরোধ রেখে নিজের ফেসবুকে গ্রথিত করেছেন প্রয়াত আব্দুল কালামের এই লেখাটি। “এশিয়া বার্তা”র পাঠকদেরও লেখাটির অন্তর্নিহিত বাণী তাদের চেতনাকে আরো বেশি শানিত ও মানবিকতায়  উদ্দীপ্ত করতে পারে বিবেচনায় তুলে ধরা হলো।

🌷””যখন আমি ছোট ছিলাম, আমার মা আমাদের জন্য রান্না করতেন। তিনি সারাদিন প্রচুর পরিশ্রম করার পর রাতের খাবার তৈরি করতেন। এক রাতে তিনি বাবাকে এক প্লেট সবজি আর একেবারে পুড়ে যাওয়া রুটি খেতে দিলেন। আমি অপেক্ষা করছিলাম বাবার প্রতিক্রিয়া কেমন হয় সেটা দেখার জন্য। কিন্তু বাবা চুপচাপ রুটিটা খেয়ে নিলেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন স্কুলে আমার আজকের দিনটা কেমন গেছে।

আমার মনে নেই বাবাকে সেদিন আমি কি উত্তর দিয়েছিলাম কিন্তু এটা মনে আছে যে, মা পোড়া রুটি খেতে দেয়ার জন্য বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এর উত্তরে বাবা মা’কে যা বলেছিলেন সেটা আমি কোনদিন ভুলব না।

বাবা বললেন, ‘প্রিয়তমা, পোড়া রুটিই আমার পছন্দ।’

পরবর্তীতে সেদিন রাতে আমি যখন বাবাকে শুভরাত্রি বলে চুমু খেতে গিয়েছিলাম তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে তিনি কি আসলেই পোড়া রুটিটা পছন্দ করেছিলেন কিনা।

বাবা আমাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘তোমার মা আজ সারাদিন অনেক পরিশ্রম করেছেন এবং তিনি অনেক ক্লান্ত ছিলেন। তাছাড়া একটা পোড়া রুটি খেয়ে মানুষ কষ্ট পায় না বরং মানুষ কষ্ট পায় কর্কশ ও নিষ্ঠুর কথায়। জেনে রেখো, জীবন হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ জিনিস এবং ত্রুটিপূর্ণ মানুষের সমষ্টি। আমি কোনক্ষেত্রেই সেরা না বরং খুব কম ক্ষেত্রেই ভাল বলা যায়। আর সবার মতোই আমিও জন্মদিন এবং বিভিন্ন বার্ষিকীর তারিখ ভুলে যাই। এ জীবনে আমি যা শিখেছি সেটা হচ্ছে, আমাদের একে অপরের ভুলগুলোকে মেনে নিতে হবে এবং সম্পর্কগুলোকে উপভোগ করতে হবে। জীবন খুবই ছোট; প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে অনুতপ্ত বোধ করার কোন মানেই হয় না। যে মানুষগুলো তোমাকে যথার্থ মূল্যায়ন করে তাদের ভালোবাসো আর যারা তোমাকে মূল্যায়ন করে না তাদের প্রতিও সহানুভূতিশীল হও।”” 🌷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

পাঠক প্রিয়