জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত, বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রচার এবং বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যুতে সুস্থ বিতর্ক উৎসাহিত করার আহবান জানান। তিনি বিভিন্ন দেশ, সংস্কৃতি এবং ধর্মের মধ্যে শান্তির সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে, ডিজিটাল মিডিয়ার শক্তিকে কাজে লাগানোর বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উৎখাতের আগে, তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যাপকভাবে ব্যহার করা হয়েছিলো।”
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশিপ রেজুলেশনের ওপর অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের ফোরামে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি। সভা আহ্বান করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরোসি।
উদ্বোধনী অধিবেশনে আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল ফর পলিসি, ইউনেস্কোর নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক এবং আইটিইউয়ের জাতিসংঘ বিষয়ক প্রধানসহ অনেক উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বক্তব্য প্রদান করেন। পরে ডিজিটাল যুগে শান্তির সংস্কৃতির প্রচার থিমের অধীনে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি, রাষ্ট্রদূত আলেয়া আহমেদ সাইফ আল-থানি।
শান্তির সংস্কৃতির প্রচারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন সাধারণ পরিষদের সভাপতি। তিনি বলেন, “ডিজিটাল যুগে শান্তির সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অনলাইন ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন, যা সম্মান ও সহনশীলতাকে উৎসাহিত করবে; ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং বৈষম্যের মোকাবেলা করবে এবং নতুন প্রযুক্তির অপব্যবহারের ঝুঁকি মোকাবেলা করবে।”
রাষ্ট্রদূত মুহিত তার স্বাগত বক্তব্যে চলমান বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শান্তির সংস্কৃতি লালন করার অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “ডিজিটাল প্রযুক্তি যেমন জ্ঞানরাজ্যে আমাদের অভূতপূর্ব প্রবেশাধিকার দিয়েছে এবং অবারিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে, তেমনি এটি বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য, ঘৃণাত্মক বক্তব্য, অসহিষ্ণু এবং বিভাজনমূলক আখ্যানের একটি স্রোতও উন্মোচন করেছে।”
এই প্রসঙ্গে তিনি মিয়ানমার থেকে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের উৎখাতের কথা উল্লেখ করেন। বলেন, “এ সময়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যাপকভাবে ব্যহার করা হয়েছিলো।”
এই পটভূমিতে তিনি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে, বিশেষ করে তরুণদের জন্য, সাবধানতা অবলম্বনের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “এমন সাবধানতার অভাব সারাবিশ্বে সম্প্রীতি অর্জনে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা বিপন্ন করে দিতে পারে।”