রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সংলগ্নে রাজাস্থলীর লংগদু নামক গ্রাম থেকে অপহৃত তিন শ্রমিককে অবশেষে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। উদ্ধারকৃত শ্রমিকরা হলেন, বিশ্বজিৎ দে (২২), সোহাগ (২০), রূপক (২৩) গত বুধবার রাত ১০ টায় এদেরকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে বলে রাজস্থলী থানার ওসি মো. জাকির হোসেন জানান। ওসি বলেন, তাদেরকে কেন অপহরণ করা হয়েছে তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। জানা যায়, অপহরণের পর থেকে শ্রমিকদের পক্ষে তাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থেকে থানায় কোনো প্রকার অভিযোগ করা হয়নি। রাষ্ট্রের কর্তব্য হিসাবে অপহরণের পর থেকে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় অপহৃতদের উদ্ধার করা করেন রাজস্থলী থানা পুলিশ। গত বুধবারসহ ২দিন ধরে সার্বক্ষণিকভাবে অপহরণের ঘটনাটি তদারকি করেছেন রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার দিবাগত রাত প্রায় নয়টায় রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া লংগদু পাড়ায় ভয়ঙ্কর পাহাড়ি একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ অস্ত্রের মুখে এসব শ্রমিককে অপহরণ করে।
আর এসব তথ্য জানিয়েছেন অপহৃতদের স্বজনরা। ওইদিন শিষিরাতে সবুজ নামের একজন যুবক সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবগত করেন। তিনি আরো জানান, উক্ত সন্ত্রাসী বাহিনীটি বিগত তিনমাস ধরেই তারা সর্বমোট ১৪ জন শ্রমিককে অপহরণ করেছেন। রাজস্থলী-বাঙ্গালহালিয়া সড়কের দেয়াল নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিলেন এসব শ্রমিকরা। প্রতিদিনের মতো গত সোমবার সন্ধ্যায় কাজের শেষে আসার পথে এদেরকে অঅপহরণ করা হয়।
উল্লেখ্য এসব সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভাক্ত হয়ে স্থানীয়দের থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তারা চাঁদা উত্তোলনের কাজে ব্যস্ত রয়েছে। মূলত এসব চাঁদার জন্য তারা বিভিন্ন গ্রুপে সৃষ্টি হয়ে চাঁদাবাজী জন্য মাঝে মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে অধিকাংশ সময়ে নিহত ও আহতের ঘটনাও ঘটে থাকে। চন্দ্রঘোনার কারিঘরপাড়ার বাসিন্দা ও লিচুবাগান গ্রিল মডেল স্কুলের শিক্ষক মো. রাশেদ বলেন, এসব উপজাতীয় সংগঠনের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে প্রতিপক্ষকে গুলি করতে গিয়ে আমার ছোট ভাইকে গুলি করে হত্যা করে। এসব পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা স্থানীয়ভাবে চাঁদাবাজিতে সীমাবদ্ধতা নয়। তারা অপহরণসহ উপজাতি ও বাঙালি কৃষকদের কাছ থেকেও বাৎসরিক চাঁদা গ্রহণ করে। আর চাঁদা না দিলে এসব কৃষকদের মধ্যে নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা ৩/৪ গ্রুপকে বাৎসরিক চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে কৃষিকাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। আর তাদের ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে অনমানবিক নির্যাতন করে। তবে ওরা এসব অপরাধের পাশাপাশি মদ তৈরি করে পাচার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা খৃস্টান মিশন ও লিচবাগান এলাকার উপজাতীপল্লীর লোকজন ও বাঙালিদের অভিযোগ কুষ্ঠপাড়ায় জনৈক এক ব্যক্তি পাহাড়ি সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে প্রকাশ্যে পাহাড়ি বাংলা মদ উৎপাদন করে চট্টগ্রামসহ এলাকার বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে থানায় অভিযোগ করা হলে মদসহ উৎপাদনকারী ও পাচারকারীদের স্থানীয় পুলিশ গ্রেফতার করলে পরে একটা সুরাহ মাধ্যমে মোটা টাকার বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। আর মাসিক কিস্তি নির্ধারণ করা হয়। স্থানীয়রা জানান, ৩দিন পূর্বে চট্টগ্রাম জেলার মাদক অধিদপ্তর তদন্তে এসে পাচারকারীদের না পেলেও উৎপাদনের চুল্লী নির্ধারণ করা হয়। এরাও কাউকে গ্রেফতার না করে চলে যান।