আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজারে অভিগম্যতা এবং ট্রিপস মওকুফের মতো সহায়তা ব্যবস্থার সম্প্রসারণের প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দোহাতে কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) স্বল্পোন্নত দেশ বিষয়ক জাতিসংঘের পঞ্চম সম্মেলনের (এলডিসি-৫) সময় অনুষ্ঠিত ‘এনহ্যান্সিং দ্য পার্টিসিপেশন অফ লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিস (এলডিসিস) ইন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এন্ড রিজিওনাল ইন্টেগ্রেশন’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে সহসভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এ আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, “উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য থাকা বিভিন্ন সহায়তা ব্যবস্থা, যেমন; অগ্রাধিকারমূলক বাজার অভিগম্যতা এবং ট্রিপস মওকুফ, প্রভৃতি সম্প্রসারণ প্রয়োজন।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ডব্লিউটিও-তে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গ্রুপ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে এগুলো বিবেচনা করা প্রয়োজন।”
“টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা এবং দোহা কর্মসূচিতে আমরা যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, তা অর্জনের জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করতে হবে। এর জন্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন;” উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি আশা করেন যে এই গোলটেবিল অধিবেশনটি স্বল্পোন্নত দেশগুলো বর্তমানে যে চ্যালেঞ্জ-এর মুখোমুখি হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবসম্মত হতে হবে এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উৎপাদনশীল সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভালো ভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। আপনাদের হয়তো মনে থাকবে যে ইস্তাম্বুল প্রোগ্রাম অফ অ্যাকশন, এলডিসিগুলোর বাণিজ্যের অংশ দ্বিগুণ করার কথা বলেছিলো। তাদের বাণিজ্যের অংশ এখনো ১ শতাংশের কম রয়ে গেছে।”
“বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের বাণিজ্য-সম্পর্কিত অবকাঠামো বাড়ানো, উৎপাদনশীল সক্ষমতা তৈরি করা এবং পছন্দের বাজার অভিগম্যতা ব্যবহার করার বিষয়ে মনোনিবেশ করতে হবে। এই উদ্দেশ্য গুলো অর্জনের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর যোগাযোগ, মানবসম্পদ, বাণিজ্য অর্থ এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য সহায়তা এবং বিনিয়োগের প্রয়োজন;” বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন যে তার সরকার একটি মাল্টিমডাল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তঃসীমান্ত সংযোগের উন্নতির ওপর জোর দিয়েছে। তিনি বলেন, “এটি খরচ কমাবে, দক্ষতা বাড়াবে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উন্নত করবে। আর, আমরা দক্ষতা উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, মেধাসম্পদ ব্যবস্থার উন্নতি এবং আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন যে তার সরকারের নীতি হচ্ছে, জাতীয় উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা।