যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পানামা, এল সালভাদর, কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র সফরের পরিকল্পনা করেছেন। শীর্ষ কূটনীতিক হিসাবে এটাই হবে তার প্রথম সরকারী সফর।
পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো, সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে, কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো চাভেস, গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট বার্নার্ডো আরেভালো ও ডোমিনিকান প্রেসিডেন্ট লুইস আবিনাদেরের সঙ্গে বৈঠক করবেন রুবিও।
ল্যাটিন আমেরিকা বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত মরিসিও ক্লেভার-ক্যারোন বলেছেন, গত ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথমবারের মতো তার প্রথম সফর হিসেবে ল্যাটিন আমেরিকায় যাচ্ছেন।
কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সফরের আংশিক লক্ষ্য এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলা করা। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যখন তার পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে তৎপরতা জোরদার করছেন তখন এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন,“ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে রুবিওর সম্পৃক্ততা এই অঞ্চলে আমাদের মূল ও অভিন্ন স্বার্থে সহযোগিতা জোরদার করবে। এর মধ্যে রয়েছে, অবৈধ ও বড় আকারের অভিবাসন বন্ধ করা, আন্তঃদেশীয় অপরাধী সংগঠন ও মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করা, চীনকে মোকাবেলা করা এবং আমাদের গোলার্ধে সমৃদ্ধি বাড়াতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গভীর করা।”
ট্রাম্প বলেছেন যে চীন আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে এই দাবি অস্বীকার করেছে পানামা, জোর গলায় বলছে, নিরপেক্ষভাবে খালটি পরিচালনা করে তারা।
বৃহস্পতিবার, রুবিও সতর্ক করে বলেছিলেন, সংঘাত হলে চীন খালটিতে প্রবেশাধিকার সম্ভবত বন্ধ করে দিতে পারে।
সিরিয়াসএক্সএম রেডিওর এক সাক্ষাৎকারে রুবিও বলেন, “যদি কোনো সংঘাতের সময় চীনের সরকার তাদের পানামা খাল বন্ধ করতে বলে, তাহলে তাদের তা করতেই হবে। সত্যি বলতে, আমার কোনো সন্দেহ নেই যে এই পরিকল্পনা তাদের আগেই করে রাখা। এটি সরাসরি একটি হুমকি।”
পানামার প্রেসিডেন্ট মুলিনো, রুবিওর সাথে খালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যেকোন ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি সংবাদদাতাদের বলেন, “আমি কোনোভাবেই খালের বিষয়ে আলোচনা করতে পারি না, আর আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করার তো প্রশ্নই আসে না। এটি চূড়ান্ত। খালটি পানামারই সম্পত্তি।”
ক্লেভার-ক্যারোন শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে, বন্দর থেকে বিস্তৃত খাল অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোতে চীনা সংস্থাগুলির “ধীরে ধীরে ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি” সম্পর্কে সতর্ক কেবল যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যই নয়, পানামা এবং পুরো পশ্চিম গোলার্ধের জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয় বলে অভিহিত করেছেন । ।
কিছু বিশ্লেষক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, চীন তার প্রভাব বাড়ানোর জন্য পশ্চিম গোলার্ধ জুড়ে অর্থনৈতিক ও অ-অর্থনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে।