Thursday, January 16, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

আঞ্চলিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসাদের পতনে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন গতিশীলতার উদ্ভব ঘটেছে

আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ক্ষমতাচ্যূতি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন গতিশীলতার পথ উন্মোচন করেছে । তুরস্ক সম্ভবত শীর্ষ স্থানে যাচ্ছে, ইরান বিচলিত অবস্থানে রয়েছে এবং ইরাক, ইরানি চাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে।

সিরিয়ায় আসাদ সরকার দীর্ঘ ৫৪ বছর শাসন করেছে- প্রথমে জ্যেষ্ঠ হাফেজ আল-আসাদ এবং পরে তাঁর ছেলে বাশার আল-আসাদ। তাঁরা শিয়া গোষ্ঠীর একটি ক্ষুদ্র শাখা আলাওয়াইত সম্প্রদায়ের লোক। আঞ্চলিক বিশ্লেষকরা বলছেন এই পতন মধ্যপ্রচ্যের রাজনীতিতে বড় রকমের পরিবর্তন আনছে।

কার্নেগী ইউরোপের সিনিয়র ফেলো সাইনান আলগেন ১৯ ডিসেম্বর বৈরুতে কার্নেগী মধ্যপ্রাচ্য সেন্টারের একটি ওয়েবিনারে ভাষণ দেওয়ার সময়ে এটিকে একটি “রাজনৈতিক ভূমিকম্প” বলে অভিহিত করেন যার দীর্ঘমেয়াদি আঞ্চলিক প্রভাব থাকবে।

আলগেন বলেন,“মূলত আমরা সিরিয়ায় এমন একটি সরকারের অভ্যুদয় দেখছি যারা হয়ত ৫০ বছর পরে ইরানপন্থি না হয়ে অনেক বেশি তুরস্কপন্থি হবে। আঞ্চলিক শক্তির সমন্বয়ে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আর সেটিই হচ্ছে আরেকটি কারণ যে আসাদের পতনকে আংকারায় কেন এতটা উত্সাহের সঙ্গে স্বাগত জানানো হলো।”

পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক ইউরোপীয় কাউন্সিলের মধ্যপ্রাচ্য কর্মসূচির উপ-প্রধান এলি জেরানমায়েহ বলেন সিরিয়ায় ইরানের সম্পদের ‍উপর এবং প্রতিবেশি লেবাননে ইরানের প্রক্সি হেজবুল্লাহর উপর ইসরায়েলের আক্রমণ এবং সেই সঙ্গে খোদ ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের সামরিক আ্ক্রমণ ইরানের জন্য “ আঞ্চলিক হিসেব-নিকেষ করার মূহুর্তকে তুলে ধরছে” ।

তিনি বলেন,“তারা (ইরান) নিশ্চিত ভাবেই পিছিয়ে পড়েছে। এখন তাদের কৌশলগত দিক থেকে নতুন করে চিন্তা করতে হচ্ছে যে এখান থেকে তাদের অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক নীতি ঠিক কোথায় যাবে”

জেরানমায়েহ বলেন ইরানের আঞ্চলিক মর্যাদা নেমে যাওয়ায় এবং সিরিয়া, লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনে তাদের তথাকথিত প্রতিরোধের অক্ষ প্রায় ভেঙ্গে পড়ায় শক্তিধর বিপ্লবী গার্ড কোরের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের স্থলাভিষিক্ত হবেন অন্যান্যরা।

কার্নেগী মধ্যপ্রাচ্য সেন্টারের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো হারিস হাসান বলেন, “ ইরানের প্রতিরোধ অক্ষের শেষ শক্ত ঘাঁটি হচ্ছে ইরাক” তবে সেটিও বদলে যেতে পারে।

হাসান বলেন, “সুতরাং ইরান সেই প্রভাবটিকে শক্তভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু যেমনটি আমরা দেখছি শক্তির ভারসাম্যে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে এবং তেহরান থেকে আসা কিছু চাপ প্রতিহত করতে ইরাকি সরকার অধিকতর স্বাধীনতা অর্জন করেছে”।

হাসান বলেন সিরিয়ায় সম্ভাব্য ইসলামপন্থিদের নেতৃত্বে সরকারের বিষয়ে তার প্রতিবেশিদের মধ্যে যেমন, তেমনি আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারকারী সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যেও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন সেটি,“ইরাককে নতুন সুবিধা দিতে পারে কারণ সিরিয়ার সঙ্গে তার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে এবং এ দু’টি দেশের মধ্যে শক্তিশালী আন্তঃসীমান্ত সম্পর্ক রয়েছে”।

হাসান বলেন সেই কারণেই ইরাক, ইরানের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারে বিশেষত ওই অঞ্চলে যখন পরিবর্তন ক্রমশই আসছে।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়