Saturday, March 15, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

আগে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি, জামায়াতের চাওয়া ‘সংস্কারে ঐকমত্য’

জাতীয় নির্বাচন সবার আগে, তারপরই স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডে প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম সভায় বসেছিলেন কমিশনের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে তিনি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেছেন। সংস্কার প্রতিবেদনগুলো নিয়ে আলোচনার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। এতে দলগুলো কমিশনগুলোর সঙ্গে কথা বলবে, এরপর একটি ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।”

তিনি বলেন, “এটিই ছিল আজকের (বৈঠকের) মূল কথা ও প্রাথমিক আলোচনা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে কথা বলেছেন। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের জন্য ঐকমত্য তৈরি হবে; সেটার ওপর ভিত্তি করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটিই আমাদের প্রত্যাশা।”

জাতীয় নাকি স্থানীয় নির্বাচন—কোনটি আপনারা আগে চাচ্ছেন, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, জাতীয় নির্বাচন সবার আগে হতে হবে, তারপরে স্থানীয় (সরকার) নির্বাচন।”

সংস্কারে ঐকমত্যে পৌঁছানোর পর নির্বাচন হোক: জামায়াত

প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছানোর পরই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা বলেছেন।

বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে জামায়াত কোনো প্রস্তাব দিয়েছে কিনা—জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, যে সংস্কার প্রয়োজন, সে বিষয়ে সবাই ঐকমত্য হলে যথাশীঘ্র সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তারা জাতীয় নির্বাচন করবেন। আমরা দেখছি, কীভাবে সেটা এগিয়ে যায়।”

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘসূত্রতা চাই না: আলী রীয়াজ

যত দ্রুত সম্ভব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়, সেই চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা। সেজন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নেতৃত্বাধীন ব্যক্তিদের পাঠানোর অনুরোধ করেছিলাম, যাতে করে তারা পরস্পরের সঙ্গে কেবল পরিচিতই হবেন না, পাশপাাশি তাদের বক্তব্যগুলোও যেন শোনা যায়।”

তিনি বলেন, “এখানে আজ কোনো রকমের সংলাপের বিষয় ছিল না। আজকের লক্ষ্য ছিল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রক্রিয়া কী হবে— সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করা।”

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ৭ সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন

এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ৬ সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বিবেচনা ও গ্রহণের জন্য এই কমিশন গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।

১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ শুরু করেছে। কমিশনের মেয়াদ ৬ মাস। কমিশন নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশের কার্যক্রমসহ নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ বিবেচনা ও গ্রহণের জন্য জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপের সুপারিশ করবে।

এই কমিশনের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। কমিশনের কার্যালয় সরকার নির্ধারিত হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

এর আগে ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ৬টি কমিশন গঠনের কথা জানান।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়