বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এই যুদ্ধে তারা জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে জনগণকে হত্যা করেছে। গণহত্যা চালিয়ে এদেশের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের জীবন কেড়ে নিয়েছে। ঐ যুদ্ধে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে বংশাল থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বংশাল থানা আমীর মাহবুবুল আলম ভূইয়া’র সভাপতিত্বে বংশাল সুরিটোলা প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী হাফেজ এনায়েত উল্লাহ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সাথে তার ৩০০ ভুয়া এমপি ও মন্ত্রীরা পালিয়ে গেছে। কোথাও তাদের দেখা যায় না। তাদের সাথে জাতীয় মসজিদের ইমামও পালিয়ে গেছে। যেটি পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। কোন ইমাম পালিয়ে যেতে পারে না, ইমামের আসনে বসে থাকা আওয়ামী দালালই পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগসহ পুরো প্রশাসন এমনকি মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনও নিয়োগে দলীয় আর আত্মীয়করণ করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে খুন, গুম, হত্যা, হামলা-মামলা, রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। তারা জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে, জনগণ তাদেরকে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী জনগণের মাঝে ছিল আছে এবং থাকবে। জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গড়বে।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, নারায়ে তাকবীর স্লোগানে শেখ হাসিনার গদি ও হৃদয় কেঁপে উঠতো। তার দোসর পুলিশ সদস্য বিপ্লব কুমার সরকারসহ পুলিশের মধ্যে থাকা ছাত্রলীগ যুবলীগের গায়ে আগুন জ্বলতো। যার কারণে তারা নারায়ে তাকবীর স্লোগান বন্ধ করতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন আল্লাহ এদেশের জনগণের মাধ্যমে পূরণ করতে দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে যেদিন পল্টন ময়দানে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে নারায়ে তাকবীর স্লোগান দিয়ে জনগণ ভারতকে হুশিয়ারী দিয়েছিলো সেদিন থেকেই জামায়াতকে নিঃশেষ করতে ভারতের নিদের্শে আওয়ামী লীগ কাজ শুরু করে। সেকারণেই জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিচারিক হত্যা করা হয়েছে।
মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন বলেন, জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতাও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেনি। তাদের অপরাধ ছিল তারা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের আন্দোলন করছে। তাদের নেতৃত্বে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন হচ্ছে। এদেশের জনগণের প্রত্যাশিত মানবিক ও কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে।
ড. আব্দুল মান্নান বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে তাকবীর বন্ধ করতে চেয়েছে। জনগণ তাদেরকেই নিষিদ্ধ করে তাদের দাদার বাড়ি ভারতে বিতাড়িত করেছে। শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত চলে যায়, তার মেয়েও ভারত চলে যায়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লালবাগ-বংশাল জোনের সহকারী পরিচালক এস. এম আহসান উল্লাহ, কোতয়ালী থানা আমীর মতিউর রহমান, চকবাজার থানা আমীর আনিছুর রহমান, ঢাকা মহানগর পূর্ব শিবির সভাপতি মাওলানা মোজাফফর হোসেন প্রমুখ। -প্রেসবিজ্ঞপ্তি।