Skip to content

অ্যাম্বুলেন্স আটকে গুলিবিদ্ধ শিশু ও তার মাকে পুড়িয়ে মারল জনতা

অ্যাম্বুলেন্স আটকে গুলিবিদ্ধ শিশু ও তার মাকে পুড়িয়ে মারল জনতা

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা জাতিগত দাঙ্গায় এবার অ্যাম্বুলেন্স আটকে গুলিবিদ্ধ এক শিশু, তার মা এবং তাদের এক আত্মীয়াকে পুড়িয়ে মেরেছে উন্মত্ত জনতা। বুধবার রাজধানী ইম্ফলের পশ্চিমে ইরোইসেম্বা এলাকায় ঘটেছে এই ভয়াবহ ঘটনা।

নিহত ওই শিশুর নাম তোনসিং হ্যাসিং, তার মায়ের নাম মীনা এবং আত্মীয়ার নাম লিডিয়া বলে জানা গেছে।

পুলিশসূত্রে আরও জানা গেছে, বুধবার ইরাইসেম্বাায় জাতিগত সংঘাতে গুলিতে আহত হয় ৮ বছর বয়সী তোনসিং হ্যাসিং। মাথা থেকে শুরু হয় অবিরাম রক্তপাত। তড়িঘড়ি স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তোনসিংকে নিয়ে তার মা মীনা রওনা দিয়েছিলেন রাজধানী ইম্ফলের হাসপাতালের উদ্দেশে। সঙ্গে ছিলেন তার আত্মীয়া লিডিয়া।

কিন্তু পথেই সেই অ্যাম্বুল্যান্স আটকায় দুষ্কৃতীরা। তারপর তাদেরকে গাড়ির ভেতরে রেখেই আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় ৩ জনকে। দাঙ্গাবিধ্বস্ত মণিপুরে এই প্রথম এই মাত্রার নৃশংস ঘটনা ঘটল। । ঘটনাচক্রে, মণিপুরের মেইতেই নৃগোষ্ঠীর নারী মীনার স্বামী রাজ্যের কুকি নৃগোষ্ঠীর। মণিপুরের সাম্প্রতিক এই দাঙ্গায় এই দুই গোষ্ঠী পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে।

দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে সেখানে কর্মরত আধা সামরিক বাহিনী আসাম রাইফেলসের তরফে জানানো হয়েছে, কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ওই অ্যাম্বুলেন্সটি তাদের প্রহরায় ছিল। কাংকোকপি জেলার সীমানাবর্তী ল্যাম্ফেল থানা এলাকায় মণিপুর পুলিশ সেটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়, তখন গভীর রাত। ওই এলাকায় সম্প্রতি কুকি এবং মেইতেই জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে উন্মত্ত জনতার সামনে পড়ে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। তার পরেই ঘটে ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ড।

মণিপুরে দাঙ্গার শুরু যেভাবে

বিভিন্ন জনজাতি অধ্যূষিত রাজ্য মনিপুরের সংখ্যাগুরু জাতিগোষ্ঠী মেইতেই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের তফসিলি উপজাতি বা এসটি তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের বসবাস মূলত ইম্ফল উপত্যকায়।

এদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করেন যে আদিবাসীরা, তাদের একটা বড় অংশ মূলত নাগা, কুকি, চিনসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মানুষ।

মেইতেইরা যদি তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান, সেক্ষেত্রে রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষজন বঞ্চিত হবেন—এই আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল।

কিন্তু ৩ মে, মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে বলে। বুধবার হাইকোর্ট এই সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরপরই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলো বিক্ষোভ শুরু করে, আর সেই থেকেই সূত্রপাত এই জাতিগত দাঙ্গার।

এসএমডব্লিউ



বার্তা সূত্র